অলিভ অয়েল তেলের উপকারিতা কি

অলিভ অয়েল তৈলের অসাধারণ স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে জানুন। এটি হার্টের স্বাস্থ্য, ত্বক ও চুলের যত্ন, ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। প্রতিদিনের জীবনে অলিভ অয়েলের ভূমিকা সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুন।"

অলিভ অয়েল তেলের উপকারিতা কিঅলিভ অয়েল তেলের উপকারিতা কি জানতে পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন

ভুমিকা:-

অলিভ অয়েল, যা "তরল সোনা" নামে পরিচিত, শুধুমাত্র রান্নায় নয়, স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য চর্চায়ও একটি অপরিহার্য উপাদান হিসেবে বিবেচিত। এর প্রাকৃতিক পুষ্টিগুণ ও অসংখ্য উপকারিতা এটি বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় করে

 তুলেছে। হার্টের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ওজন নিয়ন্ত্রণ, ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি, এবং চুলের যত্নসহ দৈনন্দিন জীবনের নানা ক্ষেত্রে অলিভ অয়েল ব্যবহার করা হয়। এটি কেবল স্বাস্থ্যের জন্যই উপকারী নয়; 

পরিবেশবান্ধব ও টেকসই একটি পণ্য হিসেবেও এর বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। অলিভ অয়েলের অগণিত গুণাগুণ সম্পর্কে জানতে শুরুতেই এর বিস্ময়কর দিকগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা প্রয়োজন।

অলিভ অয়েল কী এবং কেন এটি জনপ্রিয়:-

অলিভ অয়েল, যা বাংলা ভাষায় জলপাই তেল নামে পরিচিত, বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যসচেতন এবং সৌন্দর্য সচেতন মানুষের মধ্যে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় একটি পণ্য। এটি মূলত জলপাই ফল থেকে প্রাপ্ত একধরনের প্রাকৃতিক

 তেল, যা তার অনন্য পুষ্টিগুণ এবং বহুমুখী ব্যবহারের জন্য পরিচিত। এর প্রাচীন ইতিহাস থেকে শুরু করে আধুনিক জীবনযাত্রায় এর ব্যবহারের বহুমাত্রিক দিক নিয়ে বিশদ আলোচনা করা যেতে পারে।

অলিভ অয়েলের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি,অলিভ অয়েল হল জলপাই ফল থেকে নিষ্কাশিত একটি প্রাকৃতিক তেল, যা প্রধানত ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে উৎপাদিত হয়। এটি রান্না, সৌন্দর্য চর্চা এবং 

চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। অলিভ অয়েল তার উচ্চ পুষ্টিগুণ এবং স্বাদে ভিন্নতার জন্য বিখ্যাত। এটি এক্সট্রা ভার্জিন, ভার্জিন এবং রিফাইন্ড তেলের মতো বিভিন্ন প্রকারে পাওয়া যায়।

অলিভ অয়েলের উৎপত্তি ও ইতিহাস,লিভ অয়েলের ইতিহাস হাজার বছরের পুরনো। এটি প্রাচীন মিশর, গ্রীস এবং রোমান সভ্যতার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। প্রাচীনকাল থেকে এটি শুধুমাত্র খাদ্য পণ্য নয়, 

বরং একটি ওষুধ, পবিত্র উপাদান এবং ত্বকের যত্নের উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ভূমধ্যসাগরীয় দেশগুলোতে জলপাই গাছের চাষাবাদ এবং অলিভ অয়েলের উৎপাদন একটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য।

অলিভ অয়েল তার স্বাস্থ্যকর প্রভাবের জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত। এটি হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ, এবং ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়ক। এর মধ্যে মোনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড

 এবংঅ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা শরীরকে বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।অলিভ অয়েল খাবারের স্বাদ বাড়াতে এবং স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে রান্নায় ব্যবহার করা হয়। এটি সালাড ড্রেসিং, সস, পাস্তা, 

এবং গ্রিলড খাবারে অপরিহার্য একটি উপাদান।অলিভ অয়েলের পুষ্টিগুণ ত্বক ও চুলের যত্নে অসাধারণ ভূমিকা পালন করে। এটি ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে, বলিরেখা দূর করে এবং

 চুল মজবুত ও ঝলমলে করতে সাহায্য করে।অলিভ অয়েল সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত হয় এবং এর উৎপাদন প্রক্রিয়া পরিবেশের জন্য নিরাপদ। এটি প্লাস্টিক বা রাসায়নিক উপাদানের ব্যবহার ছাড়া তৈরি

 হওয়ায় পরিবেশবান্ধব।অলিভ অয়েলে মোনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন ই এবং ক্যালসিয়াম রয়েছে। এগুলো শরীরের জন্য অপরিহার্য।

অলিভ অয়েলে থাকা পলিফেনল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোষের ক্ষতি প্রতিরোধে সহায়ক। এটি বার্ধক্য বিলম্বিত করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়অলিভ অয়েল রান্নায় একটি অপরিহার্য উপাদান।

 এটি হালকা ফ্লেভার যুক্ত করায় খাবারের স্বাদ উন্নত হয়। নীচে রান্নায় এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহারের দিক উল্লেখ করা হলো,সালাড ড্রেসিং: তাজা শাকসবজি ও ফলের সঙ্গে অলিভ অয়েল মেশালে 

খাবারের স্বাদ ও পুষ্টিগুণ বাড়ে।রান্নার তেল: স্বাস্থ্যকর ভাজার জন্য অলিভ অয়েল একটি চমৎকার বিকল্প।মেরিনেট করা: মাংস বা মাছ মেরিনেট করার সময় অলিভ অয়েল ব্যবহারে তা সসযুক্ত ও নরম হয়।

অলিভ অয়েল একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপাদান, যা বিভিন্নভাবে ত্বক ও চুলের যত্নে ব্যবহৃত হয়।রোদে পোড়া ত্বক প্রশমিত করে।বলিরেখা কমাতে সহায়ক।চুলের যত্নে:চুল পড়া কমায়।

চুলের শুষ্কতা দূর করে।মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখেব র্তমানে সারা বিশ্বের বাজারে অলিভ অয়েল সহজেই পাওয়া যায়। এটি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মাধ্যমে পাওয়া যায়, যা বিভিন্ন গুণমান ও দামে বিক্রি হয়।

 অলিভ অয়েলের প্রকারভেদ:-

অলিভ অয়েল বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে, যার প্রতিটি তার ব্যবহার এবং গুণাগুণ অনুযায়ী আলাদা। এখানে কয়েকটি প্রধান প্রকার তুলে ধরা হলো:1. এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল: এটি সর্বোচ্চ মানের অলিভ অয়েল, 

যা প্রথম চাপ থেকে পাওয়া হয়। এতে প্রাকৃতিক স্বাদ এবং পুষ্টিগুণ থাকে, তাই এটি সালাদ বা সরাসরি খাওয়ার জন্য আদর্শ।2. ভর্জিন অলিভ অয়েল: এটি এক্সট্রা ভার্জিনের পরবর্তী মানের হয়,

 তবে এতে সামান্য কম পুষ্টি এবং স্বাদ থাকতে পারে।3. পিউর অলিভ অয়েল: এটি সাধারণত বেশিরভাগ রান্নার জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি এক্সট্রা ভার্জিন বা ভর্জিন অলিভ অয়েলের মিশ্রণ হতে পারে এবং এর স্বাদও কম।

4. লাইট অলিভ অয়েল: এতে কম ক্যালোরি এবং তেল পরিমাণ কম থাকে। এটি সাধারণত গরম রান্নার জন্য ব্যবহৃত হয়।5. রেফাইন্ড অলিভ অয়েল: এটি রিফাইনের মাধ্যমে তৈরি হয় এবং এতে কম স্বাদ ও গন্ধ থাকে। 

গরম রান্না ও ফ্রাই করার জন্য এটি উপযুক্ত।এই প্রকারভেদ গুলি জানিয়ে, আপনি আপনার রান্না এবং অন্যান্য ব্যবহারের জন্য সঠিক অলিভ অয়েল নির্বাচন করতে পারবেন। 

স্বাস্থ্য উপকারিতা: অলিভ অয়েলের শক্তি:-


অলিভ অয়েল একাধিক স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করে এবং এটি একটি শক্তিশালী প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে পরিচিত। এর কিছু প্রধান স্বাস্থ্য উপকারিতা হলো:1. হৃদরোগ প্রতিরোধ: 

এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং স্বাস্থ্যকর মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটের ভালো উৎস। এটি কোলেস্টেরলের স্তর নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

2. প্রদাহ কমানো: অলিভ অয়েলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, যা শরীরের বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধে কার্যকরী। 

৩/ওজন কমাতে সহায়ক: গবেষণায় দেখা গেছে যে অলিভ অয়েল শরীরে ফ্যাট জমতে দেয় না এবং মেটাবলিজম বাড়িয়ে দেয়, যা ওজন কমানোর প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে।

4. ত্বক এবং চুলের জন্য উপকারী: অলিভ অয়েল ত্বক এবং চুলে প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। এটি ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং চুলের শক্তি বাড়ায়।

5. ক্যান্সার প্রতিরোধ: অলিভ অয়েলে উপস্থিত পলিফেনল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে, বিশেষ করে কলোরেকটাল ক্যান্সারের ক্ষেত্রে।

6. মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যে সহায়ক: এটি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে এবং আলঝেইমার্স রোগের মতো নিউরোলজিক্যাল রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

7. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: অলিভ অয়েল ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়িয়ে দেয় এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ব্যবস্থাপনায় সহায়ক হতে পারে। 

রান্নায় অলিভ অয়েলের ব্যবহার:-

অলিভ অয়েল রান্নায় একাধিক উপায়ে ব্যবহার করা যায় এবং এটি বিভিন্ন ধরনের খাবারের স্বাদ এবং পুষ্টিগুণ উন্নত করতে সাহায্য করে। রান্নায় অলিভ অয়েলের কিছু প্রধান ব্যবহার হল:

1. সালাদ ড্রেসিং: এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল সালাদের জন্য এক আদর্শ ড্রেসিং। এটি তাজা, প্রাকৃতিক স্বাদ প্রদান করে এবং তাজা সবজি বা ফলের সাথে খুব ভালো মানিয়ে যায়। 

কিছু লেবুর রস, লবণ, গোলমরিচ ও মধু যোগ করে এর স্বাদ আরও বাড়ানো যায়।2. ভাজা এবং সেঁকা: অলিভ অয়েল কম তাপমাত্রায় ভাজা এবং সেঁকা খাবারের জন্য উপযুক্ত।

 এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল প্রাকৃতিক স্বাদ দেয়, তবে গরম করার সময় এটি সঠিকভাবে ব্যবহৃত হলে ভালো ফল পাওয়া যায়।3. স্টির-ফ্রাই বা সটেতে: অলিভ অয়েল স্টির-ফ্রাই বা সটে রান্নার জন্য খুব ভালো। 

এটি খাবারের ভেতর একটি মোলায়েম এবং সুগন্ধি স্বাদ এনে দেয়, বিশেষত সবজি বা মাংস রান্না করার সময়

4. পাস্তা সস এবং স্যুপ: পাস্তা সস বা স্যুপ তৈরিতে অলিভ অয়েল ব্যবহার করলে স্বাদ আরও সমৃদ্ধ হয়। এটি পাস্তা ও স্যুপে একটি মসৃণতা এবং সুস্বাদু গন্ধ যোগ করে।5. পিজ্জা এবং ব্রেড: পিজ্জার ডো তৈরিতে বা

 ব্রেডের ওপর অলিভ অয়েল ব্রাশ করলে এটি একটি গা dark ় এবং সুস্বাদু ক্রাস্ট তৈরি করতে সাহায্য করে। এছাড়াও অলিভ অয়েল দিয়ে ব্রেড স্ন্যাকস বা ব্রুশেট্টা তৈরি করা যায়।

6. রান্নার তেল হিসেবে: যদিও অলিভ অয়েল সোজাসুজি রান্নার তেল হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে উচ্চ তাপমাত্রায় দীর্ঘ সময় রান্না করতে একে ব্যবহার না করাই ভালো। 

মাঝারি তাপে রান্না করা হলে এটি উপকারী থাকে।7. ম্যারিনেড: অলিভ অয়েল মাংস, মাছ বা সবজি ম্যারিনেট করার জন্য খুব উপযুক্ত। এটি খাবারের মাংস বা সবজির মধ্যে একটি প্রাকৃতিক মসৃণতা এবং ফ্লেভার ধারণ করে।

 অলিভ অয়েল কেনার সময় কী কী বিষয় মাথায় রাখা উচিত:-

অলিভ অয়েল কেনার সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখা উচিত, যাতে আপনি মানসম্পন্ন এবং উপকারী তেল নির্বাচন করতে পারেন। এখানে কিছু মূল বিষয় তুলে ধরা হলো:

1. ধরন নির্বাচন:এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল: এটি সর্বোচ্চ মানের তেল, যা প্রথম চাপ থেকে তৈরি হয় এবং তাতে স্বাদ ও পুষ্টিগুণ থাকে। রান্নার জন্য বা সরাসরি খাওয়ার জন্য এটি আদর্শ।ভর্জিন অলিভ অয়েল:

 এটি এক্সট্রা ভার্জিনের পরে আসে এবং এরও কিছু পুষ্টিগুণ থাকে, তবে স্বাদ কিছুটা কম হতে পারে।পিউর বা লাইট অলিভ অয়েল: সাধারণত রান্নার জন্য ব্যবহৃত হয় এবং এতে স্বাদ কম থাকে।

 এটি সস্তা হলেও এক্সট্রা ভার্জিনের তুলনায় কম পুষ্টিকর।2. গুণগত মানের সিল:অলিভ অয়েলের বোতলের ওপর যদি PDO (Protected Designation of Origin) বা PGI (Protected Geographical


 Indication) সিল থাকে, তবে এটি তার উৎপত্তি স্থান এবং গুণমানের নিশ্চয়তা দেয়।খেয়াল রাখুন যে, এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েলের গুণমানের মানদণ্ড হিসেবে ACIDITY (অম্লতা) ০.৮% এর নিচে হওয়া উচিত

3. বোতল নির্বাচন:গা dark ় কাচের বোতল বা ধাতব ক্যান সবচেয়ে ভালো, কারণ এটি আলো থেকে তেলকে রক্ষা করে। প্লাস্টিকের বোতল সাধারণত স্বল্প সময়ের মধ্যে তেলের গুণমান নষ্ট করতে পারে।

4. মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ,অলিভ অয়েল খুব তাজা হওয়া উচিত, তাই কেনার সময় মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ দেখে নিন। তাজা অলিভ অয়েল ১৮ থেকে ২৪ মাসের মধ্যে ব্যবহার করা উত্তম।

5. তেলের রঙ এবং স্বাদ:এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল সাধারণত গা dark ় সবুজ বা হলুদ রঙের হয় এবং এর স্বাদ তাজা, ফলমূলের মতো। স্বাদ এবং গন্ধে অতিরিক্ত তিক্ততা (bitterness) বা মসলিন গন্ধ থাকতে পারে, 

যা এর তাজাতা নির্দেশ করে।6. মূল্য:অলিভ অয়েলের মূল্য সাধারনত তার মানের ওপর নির্ভর করে। এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল সাধারণত সস্তা তেলের তুলনায় একটু বেশি দামী হয়ে থাকে, 

তবে এটি স্বাস্থ্যকর এবং সুস্বাদু হয়।7. উৎপত্তি দেশ:ভালো মানের অলিভ অয়েল সাধারণত ইতালি, স্পেন, গ্রিস, তুরস্ক, বা প্রটুগাল থেকে আসে। এসব দেশগুলোর অলিভ অয়েল বিশ্ববিখ্যাত।

অলিভ অয়েল নিয়ে সাধারণ ভুল ধারণা:-

1. সব অলিভ অয়েল সমান: অনেকেই মনে করেন, সব ধরনের অলিভ অয়েল একরকম, তবে আসলে বিভিন্ন গ্রেডের অলিভ অয়েল রয়েছে। যেমন, এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল সবচেয়ে ভালো এবং 

প্রাকৃতিক, যেখানে রিফাইনড অলিভ অয়েল কিছুটা প্রক্রিয়াজাত হয়2. অলিভ অয়েল গরম করলে তার পুষ্টি নষ্ট হয়: কিছু মানুষ মনে করেন, অলিভ অয়েল গরম করলে তার পুষ্টিগুণ কমে যায়। 

কিন্তু, এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল মাঝারি তাপে রান্না করা যায়, এবং এর পুষ্টি বেশ কিছুটা বজায় থাকে।3. অলিভ অয়েল সব ধরনের রান্নার জন্য উপযুক্ত: যদিও অলিভ অয়েল স্বাস্থ্যকর, 

তবে এটি তেল ভাজার জন্য উপযুক্ত নয়। উচ্চ তাপমাত্রায় এটি সোনালী বা তেলে তাপমাত্রা বাড়লে এর গুণগত মান কমে যেতে পারে।4. অলিভ অয়েল ওজন বাড়ায়:

 অনেকের ধারণা যে অলিভ অয়েল খেলে ওজন বাড়ে। তবে, অলিভ অয়েল যদি সঠিক পরিমাণে ব্যবহৃত হয় এবং ব্যালেন্সড ডায়েটের অংশ হয়, তবে এটি শরীরের জন্য উপকারী এবং ওজন বাড়ানোর কারণ নয়।

অলিভ অয়েল তেলের অসংখ্য উপকারিতা:-

1. হার্টের স্বাস্থ্য: অলিভ অয়েলে মোনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট (MUFA) এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

2. প্রদাহ কমানো: এটি অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণে সমৃদ্ধ, যা শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। প্রদাহ কমানোর ফলে আর্থ্রাইটিস, হার্টের সমস্যা, এবং অন্যান্য প্রদাহজনিত রোগের ঝুঁকি কমে।

3. ওজন নিয়ন্ত্রণ: অলিভ অয়েল মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে এবং শরীরে ফ্যাট জমতে দেয় না, যা ওজন কমাতে সহায়ক।4. ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী: এটি ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে,

 বলিরেখা দূর করে এবং ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে। চুল মজবুত ও ঝলমলে করতে সাহায্য করে এবং চুল পড়া কমায়।5. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: অলিভ অয়েল ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়িয়ে টাইপ ২

 ডায়াবেটিসের ব্যবস্থাপনায় সহায়ক।6. ক্যান্সার প্রতিরোধ: এতে থাকা পলিফেনল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে, বিশেষ করে কলোরেকটাল ক্যান্সারের ক্ষেত্রে।

7. মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যে সহায়তা: এটি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করতে সহায়তা করে এবং আলঝেইমার্স রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

8. অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ: অলিভ অয়েল কোষের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে এবং বার্ধক্য বিলম্বিত করে।

লেখকের কথা:-

অলিভ অয়েল তেল স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের একটি দুর্দান্ত উৎস, যা বিভিন্ন উপকারিতা প্রদান করে। এটি হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী কারণ এতে মোনোআন্স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।

 এছাড়া, অলিভ অয়েল অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ, যা কোষের ক্ষতি প্রতিরোধে সহায়ক এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এতে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণও রয়েছে, যা শরীরের প্রদাহ কমাতে কার্যকর।

 তাছাড়া, এটি ত্বক এবং চুলের যত্নেও উপকারী, কারণ এটি ত্বককে ময়শ্চারাইজ করে এবং চুলকে মজবুত ও সুরক্ষিত রাখে।

Next Post
No Comment
Add Comment
comment url